
ঊষার বাণী: ০১ ডিসেম্বর ২০২০
। নিউজ ডেস্ক ।
আজ ১ ডিসেম্বর, দেশের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও গবেষক ড. মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদার জন্মদিন। তিনি ছিলেন একাধারে রসায়নবিদ, গ্রন্থকার ও শিক্ষাবিদ। বিজ্ঞান ও শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এই বিজ্ঞানী।
প্রাথমিক ও কর্মজীবন
কুদরাত-এ-খুদা ১৯০০ সালের পহেলা ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মাড়গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা খোন্দকার আব্দুল মুকিদ ও মাতা সৈয়দা ফাসিহা খাতুন। তাদের সাত সন্তানের মধ্যে কুদরাত-এ-খুদা ছিলেন দ্বিতীয়। তার বাবা খোন্দকার আবদুল মুকিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেছিলে এবং তৎকালীন সময়ে হাতে গোনা যে কয়েকজন মুসলিম ইংরেজি ভাষা জানতেন তিনি তাদের অন্যতম।
পীর পরিবারের সন্তান কুদরাত-এ-খুদাকে শৈশবে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেন তার বাবা। একদিন খুদার এক মামা যিনি কলকাতায় পড়াশোনা করছেন, তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তিনি খুদাকে বাংলা বর্ণমালার একটি বই উপহার দেন। বিকাল বেলা খুদাকে খেলতে দেখে, তার মামা, সেই বইটি সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করায় বালক খুদা সব মুখস্ত উত্তর দেন। তিনি খুদার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে মাদ্রাসা থেকে ছাড়িয়ে এনে মাড়গ্রাম এম.ই. স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। পরবর্তীতে কুদরাত এ খুদা কলিকাতার উডবার্ন এম.ই. স্কুলে এবং কলকাতা মাদ্রাসায় পড়শোনা করেন।
কলকাতা মাদ্রাসা থেকে ১৯১৮ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন কুদরাত-এ-খুদা। তারপর তিনি ভর্তি হন বিখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজে। কলেজের শিক্ষক প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রিয় ছাত্র ছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকেই ১৯২৫ সালে রসায়নে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এম.এস.সি পাশ করেন কুদরত এ খুদা। এরপর সরকারি বৃত্তি নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান ডক্টরেট করার জন্য। সেখানে তিনি স্যার জে. এফ থর্পের অধীনে থিসিস করেন। প্রফেসর থর্প কুদরত এ খুদাকে স্বাধীনভাবে গবেষণা করার সুযোগ দেন। ফলে চারবছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ কাজ করেন তিনি। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Stainless Configuration of Multiplanmet Ring বিষয়ে গবেষণার জন্য তিনি ১৯২৯ সালে রসায়নে ডি.এসসি. ডিগ্রি লাভ করেন।
ডক্টর অব সায়েন্স (ডি.এসসি. ডিগ্রি) অর্জনের পর দেশে ফিরে আসার পর প্রথমে তার কোনো চাকরি জুটেনি। ফলে দীর্ঘ আড়াই বছর বেকার ছিলেন তিনি। সেসময় প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি নিয়ে গবেষণা থিসিস লিখেন তিনি।